Monday, March 24, 2014

শিমুল গাছের উপকারীতা

শিমুল গাছ কে আমরা অনেকেই অহেতু গাছ মনে করি। শিমুল গাছের গুনাবলী আমরা অনেকেই জানি না। জানি না শিমুল গাছ দিয়ে কি কি রোগের চিকিৎসা করা যায়। আজ আপনাদের শিমুল গাছের গুনাবলী নিয়ে আলোচনা করবো।


শিমুল গাছের পরিচয় : সাধারণ গ্রাম বাংলার শিমুল গাছ দেখা যায়। শিমুল গাছ বা শিমুল ফুল চেনে না এমন লোক অনেক কম আছে। শিমুল গাছের ইংরেজি নাম Silk Cotton । এটি উচচতা 15 থেকে 20 মিটার। শিমুল গাছ ছোট ছোট কাটা যুক্ত। শিমুল কাছের ফুল খুবই প্রসিদ্ধ আমাদের দেশে। শিমুল গাছ থেকে তুলাও হয়। আর বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।



রোগের চিকিৎসায় শিমুলের ব্যবহার : বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় শিমুল গাছের ব্যবহার সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল।

ফোড়া : ফোড়া হলে শিমুল গাছের ছাল ধুয়ে বেটে, ফোড়ার উপর প্রলেপ দিলে উপকার হয়।

য়ৌবনকালে শুক্রাল্পতায় : চারা শিমুলগাছের মূল বেটে 7 থেকে 10 গ্রাম নিয়ে তার সাথে একটু চিনি মিশিয়ে দু’বেলা খেলে শুক্রাল্পতা দুর হবে।

প্রৌঢ় অবস্থায় শুক্রাল্পতায় : চারা শিমুল গাছের নরম মূল চাকা-চাকা করে কেটে শুকিয়ে নিন। এবার ভালোভাবে চুর্ণ করে ছেকে একটা শিশিতে ভরে রাখুন। সে চুর্ণ দেড় থেকে দুগ্রাম মাত্রায় নিয়ে এককাপ দুধের সাথে খাবেন। এতে প্রচুর উপকার হবে।

প্রদরে : শিমুলের কচি মূল গাওয়া ঘিয়ে ভেজে নিন। নামাবার সময় তাতে সামান্য সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে দিন। এবার দেড় গ্রাম মাত্রায় নিয়ে এটা দু’বেলা খাবেন। প্রদরে খুব উপকার হয়।

পোড়া ঘায়ে : শিমুল তুলা নিয়ে তাতে শিমুল গাছের ছাল অথ্যাৎ মোচরস দিয়ে ভিজিয়ে পোড়া ঘায়ে দিন, ঘা সেরে যাবে।

রক্ত আমাশয়ে : শিমুলের ছাল ‍চুর্ণ করে  এক থেকে দুই গ্রাম মাত্রায় নিয়ে, ছাগল দুধের সাথে মিশিয়ে দু বেলা খাওয়ালে উপকার হবে।

Friday, March 14, 2014

হাতিশুড়া গাছের উপকারীতা

আমারা অনেকেই হাতিশুড়া গাছের গুনাবলী জানি না। অনেকেই চিনিনা এই গাছ কে। আপনাদের কে হাতিশুড়া দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার কথা জানাবো।

হাতিশুড়া গাছের পরিচয় : বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রাম অঞ্চলে হাতিশুড়া গাছ দেখা যায়। হাতিশুড়া বর্ষজীবি উদ্ভদ। লম্বায় এক থেকে দুই ফু পর্যন্ত বাড়ে। কান্ড ফাপা ও বেশ নরম। গাছের প্রায় সব শাখা খাড়া হয়ে থাকে। সাদা ছোট লোমে গাছ ঢাকা থাকে। পাতা দেখতে ডিম্বাকৃতি, আগা দিকটা ছোট। নিচের দিকে কোন লোম থাকে না। বৃন্তদেশ গোলাকার অথবা হৃদপিন্ডাকৃতি। পুষ্পদন্ড অনেকটা হাতির শুড়ের মত, সামনের দিকটা বাকানো। বাংলাদেশের সর্বত্রই পাওয়া যায় এই হাতিশুড়া।



বিভিন্ন চিকিৎসায় হাতিশুড়া : নিচে হাতিশুড়া গাছের উপকারীতা আলোচনা করা হল।

মাড়ির ঘায়ে: হাতিশুড়া গাছের পাতার রস সকালে এবং রাতে শোয়ার সময় প্রযোগ করলে তাড়াতাড়ি ক্ষত আরোগ্য লাভ করে।

চোখ ওঠায় : হাতিশুড়া গাছের পাতা ও কচি ডালের রস চোখে দিনে তিনবার করে প্রয়োগ করলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। হাতিশুড়া চোখ ওঠার মহামুল্যবান ওষুধ।

বিছা ও বোলতা কামড়ালে : পাচ গ্রাম পাতার রস ও সমপরিমাণ রেড়ির তেল মিশিয়ে বিছা অথবা বোলতা কামড়ানোর স্থানে লাগালে যন্ত্রনায় আরাম হয়।

পাগলা কুকুরে কামড়ালে : পাগলা কুকুরে কামড়ালে হাতিশুড়া গাছের পাতার রস দশ গ্রাম পরিমাণ খাওয়ালে কুকুরের বিষ বিনষ্ট হয়।

ক্ষত ও ফোড়ায় : পোকা-মাকড়ের কামড়ে ক্ষতের সৃষ্টি হলে অথবা ফোড়া ফেটে যাবার পর ঘা শুকিয়ে যাবার জন্য হাতিশুড়া গাছের পাতার কচি ডালের রস প্রয়োগ করলে ঘা খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।

গর্মী ঘায়ে : হাতিশুড়া গাছের পাতা বেটে ঘায়ে দিলে ঘা শীঘ্র শুকিয়ে যায়।

সন্নিপাত জ্বরে : একটি হতিশুড়া গাছে বেটে তার রস দশ গ্রাম পরিমাণ খেলে সন্নিপাত জ্বর নিরাময় হয়।

ব্রণে : বয়সে ব্রণ প্রায় অধিকাংশ যুবক যুবতির মুখে দেখা য়ায়। ভালো হয়ে গেলেও গালে কাল কাল দাগ পড়ে যায়। মুখের শ্রী বিনষ্ট হয়। হাতিশুড়া পাতা ও তার কচি ডাল বেটে দুপুরে গোসল করতে যাবার এক ঘন্টা আগে ব্রণের ওপর প্রলেপ দিলে ব্রণ সারে এবং নতুন করে আর ব্রণ হয় না।

Tuesday, March 4, 2014

আমলকী দিয়ে রোগের চিকিৎসা

আমলকী বেশ বড় ধরনের গাছ। আবহাওয়ার গুনের কারণে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন উচ্চতা লাভ করে। আমলকীর  পাতা দেখতে তেতুলের পাতার মত। আমলকী একটি জংলি গাছ। এই জংলি আমলকী দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা হয় যা আমরা অনেকেই জানি না।



রোগের চিকিৎসায় আমলকী: আমলকী একটি ওষুধি গাছ। এর গুনাবলীর শেষ নেই। কিছু গুরুত্বপূর্ন রোগের জন্য আমলকীর কিছু গুনাবলী নিম্নে দেওয়া হল।

কোষ্ঠবদ্ধতায়ঃ আমলকী, হরীতকী, বহেড়া এ তিনটি প্রতিটি 4 গ্রাম পরিমাণ আগের দিন সন্ধ্যা নাগাদ ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খালিপেটে খেলে কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়। এছাড়াও বায়ু, পিত্ত ও কফ এ তিনটি রোগও দুর হয়।

অম্লরোগঃ অম্লরোগে প্রতিদিন সকালে 6 গ্রাম পরিমাণ আমলকী পাতার রসে চিনি এক চামচ মিশিয়ে খেলে অম্লরোগ চিরতরে ভালো হয়ে যায়।

বহুমুত্র রোগঃ আমলকী গুড়া 3 গ্রাম,  চায়ের চামচের 1 চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে বহুমুত্র রোগের উপকার হয়। তবে মধু নিম ফুলের, আমের অথবা কাল জামের হওয়া দরকার। কারণ এ তিন ফুলের মধু বহুমুত্র রোগের উপকারী বস্তু।

চোখ ওঠাঃ চোখ ওঠা রোগ কাচা আমলকীর রস দুফোটা করে সারা দিনে দুবার চোখে দিলে চোখ ওঠা ভালো হয। তবে তিন দিন দেয়া দরকার।

চুল ওঠে যাওয়াঃ যাদের চুল ওঠে যায়। তারা বিভিন্ন প্রকার দামী দামী শ্যাম্পু ব্যবহার করে। য়দি আমরা কাচা আমলকী বেটে গোসল করএত যাবার তিন ঘন্টা আগে মাথায় মাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ফলে চুল ওঠা বদ্ধ হয়ে যায়।

মাথা ধরাঃ আমলকী বেটে তার সাথে সাদা চন্দন ঘষে ভালোভাবে মেখে সারা কপালে দিলে রোগী আরাম পাবে এবং মাথা ব্যাথা কমে যাবে।

নাক দিয়ে রক্ত পরাঃ যাদের নাকে দিয়ে রক্ত পরে তারা শুকনা আমলকী এর পানি দিয়ে পরিষ্কার শিলে বেটে তালুতে প্রলেপ দিলে রক্ত পরা কমে যাবে।

আমলকীর আরো অনেক গুনাবলী রয়েছে। আমলকীর গুনাবলী বা উপকারীতা অনেক। এখানে সামান্য কিছু আলোচনা করা হয়েছে।

Monday, March 3, 2014

অর্জুন গাছের উপকারীতা

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রাম অঞ্চলে অর্জুন গাছ দেখা যায়। অর্জুন গাছ একটি তুলনামূলক ঔষুধি গাছ। এ গাছ দিয়ে বিভিন্ন প্রকার ওষুধ তৈরী হয়। আজ আপনাদের অর্জূুন গাছের দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা কথা তুলে ধরব। অর্জন গাছ কে চেনার জন্য ক্লিক করুন।

বিভিন্ন অসুখে অর্জুন গাছের উপকারীতা :

প্রস্রাব বন্ধেঃ বিভিন্ন কারনে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। যদি কারো প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাহলে অর্জুন গাছের রস রোগীকে খাওয়ালে তার প্রস্রাব বাহির হয়ে যাবে।

রক্ত আমাশয়: আমরা রক্ত আমাশয়ের জন্য বিভিন্ন প্রকার দামি দামি ওষুধ ব্যবহার করি। অথচ হাতের কাছে অর্জুন গাছের ছাল ভালো করে বেটে ছাগলের দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো হয়ে যায়।

যহ্মারোগ : যহ্মা রোগে প্রথমে অর্জুন গাছের ছালকে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে তারপর মিহি করে গুড়া করতে হবে। তারপর পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে ছেকে বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে আবার রোদে শুকিয়ে নিন। এভাবে বাসক পাতার রসে ভিজিয়ে মোট সাতবার রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। ঐ ‍গুড়া 3 গ্রাম পরিমাণ নিয়ে দু’চামচ মধু চিনির সাথে মিশিয়ে রোজ সকালে এবং সন্ধায় মোট দু’বার খেতে হবে। এ রোগে দীর্ঘ চিকিৎসায় প্রয়োজন হয়। কাজেই চিকিৎসককে অনেক দিন ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা করে যেতে হবে। রোগীকেও ধৈর্য ধরতে হবে।

লো-ব্লাডপ্রেসারে:  কাচা অর্জুন গাছের 10 গ্রাম ছাল 500 মিলিলিটার গরুর দুধে ফুটিয়ে 200 মিলিলিটার পরিমাণ থাকতে আচ থেকে পাত্র নামিয়ে নিতে হবে। মাত্র 7 দিন একবার করে খেলে রক্তের চাপ স্বাভাবিক হবে।

মেচতার দাগঃ যৌবন বয়সে ব্রণ এবং বয়সকালে লিভার দুর্বল হয়ে গালে কাল ছাপ ধরে। এ দাগকে আমরা চলতি কথায় মেছতা বলে থাকি। অর্জুন গাছের ছাল মিহি করে গুড়িয়ে সে গুড়া মধুর সাথে মেখে খাবার তিন ঘন্টা আগে গালে লাগালে মেচতা দাগ উঠে যাবে। তবে দিনকতক নিয়মিত প্রযোগ করা দরকার।

এছাড়া অর্জুন গাছের ছাল যখন ওষুধ হিসেবে ব্যবহারে জন্যে সংগ্রহ করা হবে, সে ছাল যেন পূর্বদিক থেকে নেয়া হয়। কারণ সকালের রোদ পায় এমন গাছ এবং তাতে বেশি উপকার হয়।